ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক ছাত্রীকে হেনস্তা ও ফেল করানোর অভিযোগ কুষ্টিয়ার সময়সহ বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হলে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
এর প্রেক্ষিতে আজ ৯ জুলাই ২০১৮ ইং তারিখে প্রশাঃ ইবি ২০১৮/১৩৯ এক বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. অরবিন্দ সাহাকে আহবায়ক এবং ছাত্র উপদেষ্টা ড. রেজুয়ানুল ইসলাম ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট শাহাদত হোসেন আজাদকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে ১৫(পঁনের) কর্ম দিবসের মধ্যে অভিযোগের সত্যতা যাচাই পুর্বক উপাচার্য বরাবর রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার এস এম আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত ৫ জুলাই ২০১৮ ইং তারিখে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে হেনস্তা ও ফেল করানোর অভিযোগ ওঠে। শিক্ষকের দ্বারা সৃষ্টমানসিক চাপ ও হুমকির কারণে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন ওই ছাত্রী বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী ও তার একজন সহপাঠি।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, দুই ছাত্রী উল্লিখিত শিক্ষকের ১২৩ ও ১২৫ নম্বর কোর্সে ফেল করেন। পরে সম্পূরক পরিক্ষা দিয়ে পাস করেছেন তাঁরা সর্বশেষ গত ১ জুলাই তৃতীয় সেমিস্টারের ভাইভা (সাক্ষাৎকার) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ওই শিক্ষক মানসিকভাবে হেনস্তা করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। এরপর থেকে মেয়েটি ভেঙে পড়েন এবং অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখা যায়।
ওই শিক্ষক বেশকিছুদিন থেকে নানা ভাবে তাকে ফোন করে ও এসএমএসে হুমকি ও হেনস্তা করেছেন বলে তিনি সহপাঠীদের জানান।
সহপাঠীরা জানান, ভাইভার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁকে হলে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তাঁকে তাঁর আবাসিক হলের একটি কক্ষ থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায়উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপরও মানসিক অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় তাঁর পরিবারকে জানানো হয়।
এদিকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মেয়েটির ভাই এসে মেয়েটিকে হল থেকে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। মেয়েটির ভাই বলেন, ‘আমার বোন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের স্ট্যান্ডধারী ছাত্রী। সে বড় ধরনের কোনো কারণ ছাড়া মানসিকভারসাম্য হারানোর কথা নয়।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর মেয়েটিকে বিশ্ববিদ্যলয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়, পরে পরিবারের লোকজন আসলে তাকে বাড়ি নিয়ে যায়। তার মানসিকঅবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে রিপোর্ট হাতে পেলে এ বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। এবং ছাত্রী নিপীড়নের কোন ঘটনা ঘটে থাকলে প্রশাসন দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করবে”।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকরী বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হবে নারীদের অভয়ারণ্য এখানে যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স জারি আছে। তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে যদি অপরাধ প্রমাণিত হয় তাহলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’