আতঙ্কগ্রস্তরা ভয়ে ছুটছেন ওঝার কাছে : সুযোগ বুঝে ওঝা ছড়াচ্ছে ভীতি
আলমডাঙ্গার খাদিমপুর ইউনিয়নের খাদিমপুরসহ কয়েকটি গ্রামে জিন সাপের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। দিন দশেক আগে আলমডাঙ্গা গোপালনগর গ্রামে সাপে কেটে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর পর থেকে এ আতঙ্ক পেয়ে বসে। এই আতঙ্কের সুযোগে এলাকার চিহ্নিত ওঝা কবিরাজের দল অর্থ বাণিজ্য শুরু করেছে।
খাদিমপুর ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকর্মী মো. সোহাগ হোসেন জানান, ‘আমি গতরাতে বিছানায় ঘুমাচ্ছিলাম। ভোর পাঁচটার দিকে কিসে যেন আমার পায়ে কামড় দেয়। এরপর আমার ঘুম ভেঙে যায়, আশপাশে কোনো কিছু না পেয়ে পা জোলে যাচ্ছিলো বিষয়টিকে পাত্তা না দিয়ে আমার কাজে ব্যস্ত থাকি। বেলা দশটার দিকে আমার শরীরে জ্বর ও পা সামান্য অবশ হওয়া বুঝতে পারি। কবিরাজের ঝাড়ফুঁকের এক ঘণ্টা পরে স্বাভাবিক অবস্থা অনুভব করি। তবে কিসে কামড়িয়েছে বুঝতে পারছি না।’ একজন স্বাস্থ্য কর্মীর এধরনের পদক্ষেপে আতঙ্কের মাত্রা বেড়েছে বহুগুণ।
এছাড়াও খাদিমপুর গ্রামের ইমদাদুল হক, লালন, সানি, আবু, হাসমত, জুলি, দীপু, নুপুর, রকি, ওছমান ও লতিফ সাপে দংশন করেছে বলে দাবি করলে তাদেরও ঝাড়ফুঁক দেয়া হয়। অথচ সাপে কাটার তেমন চিহ্ন নেই। এরপরও কথিত কবিরাজ হালিম মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিনে প্রায় ৮০ জনকে সাপের বিষ ঝেড়ে নামিয়েছি। তবে দুই থেকে চার জনকে সাপে কামড়িয়েছে বাকি সব জিন সাপে দংশন করেছে। ব্যবস্থা না নিলে মারা যেতে পারে।’ ওঝার কথা শুনে জিনসাপের আতঙ্ক এলাকাবাসীকে তটস্থ করে তুলেছে।
আতঙ্কের কারণে এখন গায়ে বা পায়ে পোকা বসলেই অনেকেই ওই ওঝা কবিরাজের কাছে ছুটছে। এরকমই অবস্থার শিকার খাদিমপুর গ্রামের মাঠপাড়ার মনোয়ার হোসেন এবং ওছমান। এরা বলেছেন, একটি ছোট পোকা যা উড়তে পারে। শরীরে বসলো। মনে হলো কামড়ে দিলো। এরপরই জালাপোড়া শুরু হতেই ভয়ে ওই ওঝার কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হলাম।
এ ব্যাপারে খাদিমপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার মুরছালিন কারু বলেন, এ বিষয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সাধারণ মানুষের মাঝে জিন সাপের বিশেষ আতঙ্ক সৃষ্টির কারণে মানুসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে অনেকে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওঝা কবিরাজেরা ঝাড়ফুঁকের নাটক শুরু করেছে।